কাব্বালিস্টিক ডক্ট্রিনে ডুবে থাকা প্লেটোর রিপাবলিক বইটির প্রভাব অনেক বিস্তৃত। সেকুলার ও ফিলোসফারপাড়ায় খুব সম্মানিত ব্যক্তি প্লেটো সারা জীবন কাব্বালার যাদুশাস্ত্রে ডুবে ছিল।(১) এই অন্ধকার জগতের কারণেই তার রাষ্ট্রদর্শনও ছিল অনেক ভয়াবহ। টোটালিটারিয়ান ইউটোপিয়া এবং পপুলেশন কন্ট্রোল প্রজেক্টের জনক বলা যেতে পারে প্লেটো-অ্যারিস্টটলদেরকে। প্লেটো তার ‘Republic’ এবং ‘Laws’ বইতে পপুলেশনকে সম্পদ ও রাষ্ট্রের ক্ষেত্রফলকে ফ্যাক্টর হিসেবে ধরে একটি নির্দিষ্ট অ্যামাউন্টে রাখার স্বপক্ষে বক্তব্য পেশ করে।(২)
প্লেটোর রাষ্ট্রদর্শন মূলত টোটালিটারিয়ান ইউটোপিয়া, যেখানে ব্যক্তিগত থেকে শুরু করে সামাজিক জীবন পর্যন্ত সকল ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রিত করা হবে রাষ্ট্র কর্তৃক। উক্ত ইউটোপিক রাষ্ট্রের অধিবাসীরা তিন স্তরের। গার্ডিয়ান, সোলজার এবং সাধারণ জনগণ। গার্ডিয়ান হলো রাষ্ট্রের উচ্চস্তরের সাথে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ এবং সৈনিকদের মর্যাদা সাধারণ জনগণ থেকে উপরে। সব থেকে নিম্নশ্রেণীর অধিবাসীরা হলো যারা কায়িক শ্রম করবে। রাজা হবে ফিলোসফার (বিজ্ঞানী)। প্লেটোর রাষ্ট্রদর্শনে প্রভাবিত হয়েছে অনেক আইডিওলজি। মুরতাদ জাফর ইকবালের অনেক সাইন্স ফিকশন বইয়ে যে টোটালিটারিয়ান ওয়ার্ল্ডে যে “বিজ্ঞান আকাদেমি“র খোজ মেলে তা গার্ডিয়ান শ্রেণীর।
আমি প্লেটোর রিপাবলিক বই থেকে পপুলেশন কন্ট্রোল ও বিবাহ সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে ধরছি।
• “অভিভাবক বা শাসকদের নিকৃষ্ট এবং বিকলাঙ্গ সন্তানদের নিঃশব্দে অপসারিত করার ব্যবস্থা করা হবে।*
গ্লুকন বললেনঃ হ্যা, শাসকদের বংশধারা বিশুদ্ধ রাখতে হলে এ কাজটি অবশ্যই করতে হবে।
...
...
*এখানে অবাঞ্ছিত ও নিকৃষ্ট শিশুদের নষ্ট করার প্রস্তাবের আভাস পাওয়া যায়।” (৩)
এমনকি বর্তমান রাষ্ট্রের মতো বিবাহের বয়সকে নির্ধারণ করে দিয়েছে।
• “সক্রেটিস, কোন বয়সকে তুমি নির্দিষ্ট করতে চাও?
আমি বললামঃ মেয়েদের ক্ষেত্রে মেয়েরা বিশ বৎসর বয়সে রাষ্ট্রের জন্য সন্তানধারণ করতে শুরু করবে এবং চল্লিশ বৎসর পর্যন্ত সন্তানধারণ করবে। পুরুষদের বেলা পঁচিশ বৎসর যখন তার জীবনের দ্রুততম স্পন্দনের মুহূর্ত অতিক্রান্ত হয়েছে তখন থেকে পঞ্চান্ন বৎসর পর্যন্ত পুরুষ, সন্তানের জন্মদান করতে পারবে।” (৪)
বর্তমানে যেমন সঠিক সময়ে বিবাহ করলে তাকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়, ঠিক এইরকমই প্রস্তাব উক্ত বইয়ে লিখিত আছে।
• “আমাদের নির্দিষ্ট এই বয়ঃসীমার পূর্বে কিংবা পরে কেউ যদি রাষ্ট্রের বিবাহ উৎসবে যোগদান করে তা হলে তাকে অপবিত্র এবং অন্যায় বলে গণ্য করা হবে। এরূপ নিষিদ্ধ মিলনের সন্তানকে অপবিত্র বলে গণ্য করা হবে।” (৫)
• “এবং এই নির্ধারিত বয়সের মধ্যেও শাসকদের অনুমোদন ব্যতীত কোনো পুরুষ যদি কোনো নারীর সঙ্গে মিলিত হয় তা হলে তার ওপরও এই বিধান প্রয়োগ করা হবে। তার বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযোগ হবে, সে রাষ্ট্রের জন্য অবৈধ, অননুমোদিত এবং অপবিত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছে।”(৬)
যদি রাষ্ট্রের অনুমতি ছাড়া সন্তান আসে তবে সমাধান হিসেবে অ্যাবরশন এবং নবজাতককে হত্যা করার প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে।
• “এ নিষেশ সত্ত্বেও যদি কোনো অবৈধ সন্তান জন্মগ্রহণ করে তবে এমন সন্তানকে যে, রাষ্ট্র প্রতিপালন করবে না, এ-সত্য পিতামাতার উপলব্ধি করতে হবে। এবং এ-সন্তানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা তাদের গ্রহণ করতে হবে।*
...
...
*এখানে প্লেটো অননুমোদিত ভ্রুণের গর্ভপাত এবং অননুমোদিত শিশুর জীবননাশের প্রস্তাব করেছেন।”(৭)
পপুলেশন কন্ট্রোলের প্রস্তাবনা-
• “আর এক্ষেত্রে লক্ষ্য হবে নগরীর লোকসংখ্যার গড় যাতে রক্ষিত হয়। এজন্য লোকসংখ্যার ওপর যুদ্ধ, রোগ এবং অনুরূপ অন্যান্য আপদের প্রভাবের কথা বিবেচনা করতে হবে। মোটকথা, রাষ্ট্রের লোকসংখ্যা অত্যধিক বেশি কিংবা অত্যধিক কমে পরিণত না হয়ে যায় তার যথাসম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”(৮)
•“সে যাহোক, গ্লকন, তুমি আমার সঙ্গে একমত; আমরা যেরূপ বলেছি, আমাদের রাষ্ট্রে পুরুষ এবং মেয়েদের জীবনপদ্ধতি হবে একই। একই প্রকার শিক্ষা তারা লাভ করবে, তাদের সন্তান হবে যৌথ সন্তান এবং নগর রক্ষায় কিংবা যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের উভয়ের দায়িত্ব এক। একসঙ্গেই তারা নগর প্রহরায় নিযুক্ত থাকবে, কুকুরের ন্যায় এক সঙ্গেই তারা শিকারের সন্ধানে বহির্গত হবে। মোটকথা শারীরিক গঠনে যতদূর সম্ভব মেয়েদের দায়িত্ব পুরুষের সমান হবে, এবং যৌথ জীবনে যা মহৎ তা তারা উভয়েই সাধন করবে।”(৯)
এছাড়া সিলেক্টিভ ব্রিডিং এর কথাও প্লেটো বলেছিল।(১৪)
কিছু ব্যাপারে দ্বিমত করা সত্ত্বেও অ্যারিস্টটলও পপুলেশন কন্ট্রোলের স্বপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।(১০)
রোম, স্পার্টা, চীন এবং এথেন্সে ইনফ্যান্টিসাইড প্রচলিত ছিল।(১৫)
এমনকি প্রাচীন রোমান বাথহাউজের নিচে ইনফ্যান্টিসাইডের শিকার নিষ্পাপ শিশুদের গণকবরও আবিষ্কৃত হয়েছে।(১৬)
তারমানে দেখা যাচ্ছে অভাবের অযুহাত দেখিয়ে শিশু হত্যা শুধু আরবরাই করতো না, বরং ইসলামের আলোহীন অন্ধকার সকল সভ্যতার মাঝেও বিদ্যমান ছিল।
আল্লাহ বলেন, “শয়তান তোমাদেরকে দরিদ্রতার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং অশ্লীল কাজের আদেশ করে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে তার পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।” (সুরা বাক্বারা, ২৬৮)
“তোমাদের সন্তানদেরকে তোমরা দারিদ্র্য-ভয়ে হত্যা করো না, আমিই তাদেরকে জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ।” (সুরা ইসরা, ৩১)
আল্লাহর ওয়াদা সত্য, শয়তানের ওয়াদা প্রতারণা। যে সময়ে গ্রিস, রোম, চীন, আরবে ইনফ্যান্টিসাইড প্রচলিত ছিল সে সময়ে পৃথিবীর সর্বমোট জনসংখ্যা ছিল মাত্র কয়েক মিলিয়ন। তারা সে সময়েই রিসোর্স/রিযক স্বল্পতার অভিযোগে শিশুদের হত্যা করে আসছে, অথচ বর্তমানে ৭০০ কোটি জনসংখ্যা কি বেচে নেই? আল্লাহ কি বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষকে রিযক দিচ্ছেন না? যেসব অঞ্চলে দূর্ভিক্ষ হচ্ছে তা তো কাফেরদের নির্মিত কৃত্রিম কারণে, রিসোর্সের অভাবে নয়। বস্তুত অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো এবারও শয়তানের প্রতিশ্রুতি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে, এবং আল্লাহর ওয়াদা সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ(র) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, “সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম, এটা অবশ্যই বড় কিন্তু তারপর কি? তিনি বললেন, এবং তোমার সাথে খাবে এ ভয়ে তোমার সন্তানকে হত্যা করা”। [বুখারীঃ ৪৪৭৭]
♦
রেনেসার আফটারম্যাথ হিসেবে ইউরোপে ফিলোসফারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তেমনই একজন হলো থমাস রবার্ট ম্যালথাস। ১৭৯৮ থেকে ১৮২৬ এর মধ্যে মোট ছয় সংস্করণের একটি ট্রিটাইজ পাবলিশ করে যার নাম ‘An Essay on the Principle of Population’। উক্ত বইটিতে এমন অনেক কিছু ছিল যা পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ও সংগঠনকে খুব বিস্তররূপে প্রভাবিত করে। ম্যালথাস বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ দ্বারা প্রভাবিত ছিল, যেমন ব্রেঞ্জামিন ফ্র্যাংকলিন, ডেভিড হিউম, রবার্ট ওয়ালেস, অ্যাডাম স্মিথ, রিচার্ড প্রাইস প্রভৃতি।
ম্যালথাসিয়ানিজম অনুযায়ী সময়ের সাথে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে জনসংখ্যার অনুপাতে মোট রিসোর্সের পরিমাণ হ্রাস পায়। অতএব বেচে থাকার জন্য সমাধান হলো জনসংখ্যা কমানো। আপাত দৃষ্টিতে হয়তো সবাই শুভঙ্করের ফাকিটা বুঝতে পারবে না। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে সময়ের সাথে সাথে এটিই নিয়ম এবং মানুষের ফিতরাত। আল্লাহ মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী রিসোর্স জমীনে ছড়িয়ে রেখেছেন এবং সেই রিসোর্স যাতে শর্ট না পড়ে এজন্য লাইফকোড দিয়েছেন। কিন্তু কাফেররা তাদের মনগড়া ইকোনমি দিয়ে দেশ শাসন করে, যার ফলে দেশে দারিদ্র্যতা বৃদ্ধি পায়। এ কারণে তারা জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে এবং রিসোর্সের স্বল্পতাকে দায়ী করে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তাদের দারিদ্রতার কারণ তাদের মনগড়া ইকোনমি, সেটা ইম্পেরিয়ালিজম হোক বা কমিউনিজম বা সোশ্যালিজম। তারা বিভিন্ন প্রাচীন রাষ্ট্রের উদাহরণ দেখিয়ে বলে স্বল্প রিসোর্স ও অত্যধিক জনসংখ্যার কারণে দারিদ্র্যতা ছিল, কিন্তু কখনোই ইসলামি খেলাফতে ইসলামি অর্থনীতির কারণে সদা জনসংখ্যা বৃদ্ধিকারী জাতির দারিদ্র্যতাহীন সমৃদ্ধিকে পেশ করবে না। প্রবলেম - রিঅ্যাকশন - সলিউশন মেথড অনুসরণ করার কারণে তারা নিজেরাই নিজেদের নির্মিত রাষ্ট্রকাঠামোকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর ব্যর্থ হিসেবে চিহ্নিত করে নতুন আরেকটি রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো নিয়ে এসে নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের আরো কাছে চলে যায়। ম্যাকিয়াভেলির প্রিন্স বইয়ের প্রভাবে আধুনিক সেকুলার জাতিরাষ্ট্র এর জন্ম হয়, আবার বর্তমানে সেটাকে ব্যর্থ হিসেবে চিহ্নিত করে গ্লোবাল ভিলেজ অর্থাৎ ইউটোপিয়াকে সমাধান হিসেবে দেখাচ্ছে দ্য ভেনাস প্রজেক্ট। এসব কিছুই প্রিপ্ল্যানড।
ম্যালথাস সমাধান হিসেবে দাবী করে দু ধরণের কার্যক্রম অনুসরণ করলে রিসোর্সের হিসাব অনুযায়ী জনসংখ্যা হ্রাস করা যায়। একটি হলো বার্থরেট কমানো, অন্যটি হলো মৃত্যুহার অধিকহারে বৃদ্ধি করা। তার দাবী মতে দ্বিতীয়টি অলরেডি শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রিভেন্টিভ চেক হিসেবে সে বার্থ কন্ট্রোল, বিয়ে পিছিয়ে দেওয়া এবং অবিবাহিতদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার প্রস্তাবনা পেশ করেছে। মৃত্যুহার বৃদ্ধি করার জন্য ক্ষুদা, রোগবালাই এবং যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেছে।(১১)
ম্যালথাসিয়ানিজম যেমন সমাদৃত হয়েছে তেমনই অনেকের কাছে সমালোচিতও হয়েছে। ভারতবর্ষের ওপর ব্রিটিশদের কলোনিয়াল শাসন তার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। আরেক ফ্রিম্যাসন ডারউইন, যার সম্পর্কে আগে বিস্তারিত বলেছি, সে ম্যালথাসকে ‘গ্রেট ফিলোসফার’ বলে অভিহিত করেছে। চার্লস ডারউইন এবং আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস দুজনেই তাদের আইডিয়া ডেভলপের জন্য ম্যালথাসের কাছে ঋণী হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। ন্যাচারাল সিলেকশন কন্সেপ্ট ডেভলপ করতে ম্যালথাসের বইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
ডারউইন লিখেছে- "In October 1838 ... I happened to read for amusement Malthus on Population ... it at once struck me that under these circumstances favourable variations would tend to be preserved, and unfavourable ones to be destroyed. The result of this would be the formation of new species." (১২)
আলফ্রাড রাসেল ওয়ালেস- "But perhaps the most important book I read was Malthus's Principles of Population ... It was the first great work I had yet read treating of any of the problems of philosophical biology, and its main principles remained with me as a permanent possession, and twenty years later gave me the long-sought clue to the effective agent in the evolution of organic species.” (১৩)
ডারউইনের অরিজিন অফ স্পেসিস পড়ার পর তার অর্ধ-কাজিন ‘স্যার’ ফ্রান্সিস গ্যালটন তার পূর্ববতীদের আইডিয়াগুলোকে একটি অর্গানাইজড শাস্ত্ররূপে নিয়ে আসে। উক্ত বিদ্যার নাম Eugenics। গ্যালটন একজন ফ্রিম্যাসন ছিল।(২৫) ইউজেনিক্স শব্দটি প্রথম ইউজ করে ১৮৮৩ সালে, Inquiries into Human Faculty and Its Development নামক বইয়ে।
গ্যালটন ডারউইনের থিওরী দ্বারা প্রভাবিত ছিল। ১৮৬৫ সালে "Hereditary Talent and Character" এবং পরবর্তীতে ১৮৬৯ সালে "Hereditary Genius" রচনা করে।(১৭) গ্যালটন সিলেক্টিভ ব্রিডিং এর ধারণা মানুষের ওপর প্রয়োগের প্রস্তাবনা পেশ করে Hereditary Genius এর ইন্ট্রোডাকশনে।
গ্যালটনের বক্তব্য- “......so it would be quite practicable to produce a highly gifted race of men by judicious marriages during several consecutive generations.“(১৮)
অনুবাদ- “... সুতরাং প্রজন্মের পর প্রজন্মে নির্বাচিত বিবাহের মাধ্যমে মানুষের একটি উন্নত জাত উৎপাদন সম্পূর্ণ প্রয়োগযোগ্য।“
১৯০৮ সালে, “Memories of My Life” এ গ্যালটন ইউজেনিক্সের অফিসিয়াল সংজ্ঞা প্রদান করে।
"the study of agencies under social control that may improve or impair the racial qualities of future generations, either physically or mentally"(১৯)
ইউজেনিক্সের দুটি ক্যাটাগরি, পজিটিভ ইউজেনিক্স এবং নেগেটিভ ইউজেনিক্স। পজিটিভ ইউজেনিক্স বলতে বুঝায় উন্নত বৈশিষ্ট্যাবলী মানূষদের রিপ্রোডাকশন বৃদ্ধি করা। নেগেটিভ বুঝায় নিচুস্তরের মানুষদের রিপ্রোডাকশন কমানো। নেগেটিভ ইউজেনিক্স পলিসি হিসেবে ফোর্স স্টেরিলাইজেশন কার্যক্রমের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এমনকি কখনো কখনো গণহত্যাও। পরবর্তীতে যেটা সোশ্যাল ডারউইনিজম নামে পরিচিতি লাভ করে তার সঙ্গে ইউজেনিক্স সুপারফিশিয়ালী রিলেটেড।
চার্লস ড্যাভেনপোর্ট একজন আম্রিকান বিজ্ঞানী, ইতিহাসের নেতা পর্যায়ের ইউজিনিসিস্ট। ইউজেনিক্সকে সাইন্টিফিক থিওরী থেকে তা বাস্তবায়নের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। তার পলিসি অনেক দেশে বাস্তবায়িতও হয়েছে। ড্যাভেনপোর্ট Carnegie Institution থেকে ফান্ড পেয়ে ১৯০৪ সালে Cold Spring Harbor ইনস্টিটিউশনে Station for Experimental Evolution এবং ১৯১০ সালে ইউজেনিক্স রেকর্ড অফিস প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে এগুলো এনফোর্সড স্টেরিলাজেশনের মতো জঘন্য কার্যক্রমের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রদান করে। ড্যাভেনপোর্ট International Federation of Eugenics Organization(IFEO) এর প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়।
১৯৩২ সালে ড্যাভেনপোর্ট Ernst Rudin কে তার উত্তরাধিকার হিসেবে IFEO এর প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করে, যে একাধারে স্বনামধন্য সুইস ইউজেনিসিস্ট এবং রেইস সাইন্টিস্ট। রুডিন German Research Institute for Psychiatry এর ডিরেক্টর এবং German Society for Racial Hugiene এর কো-ফাউন্ডার। কায়সার উইলহেম ইন্সটিটিউটের সাথেও সে যুক্ত ছিল। এছাড়াও আরো অনেক স্বনামধন্য ইউজেনিস্ট যেমন Harry Laughlin, Havelock Ellis, Irving Fischer, Eugen Fischer, Madison Grant, Lucien Howe এবং Margaret Sangerb প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। মারগ্যারেট New York Health Clinic এর প্রতিষ্ঠাতা, যা পরবর্তীতে Planned Parenthood এ রূপ নেয়।
আম্রিকার ইউজেনিক্স মুভমেন্টের প্রভাব জার্মানিতেও গিয়ে পড়ে। German Society for Racial Hygiene এর আন্ডারে সকল ইউজেনিসিস্ট এবং সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা ঐক্যবদ্ধ ছিল, অপরদিকে আম্রিকার ইউজেনিক্স মুভমেন্ট ছিল নানা পথে বিভক্ত।(২০)
আম্রিকান রকফেলার ফাউন্ডেশনের গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সহায়তায় ১৯২৭ সালে জার্মানির বার্লিনে Kaiser Wilhelm Institute for Anthropology (KWIA) প্রতিষ্ঠিত হয়। ক্যালিফোর্নিয়া ইউজেনিক্স লিডার C.M. Goethe জার্মানি থেকে ফিরে আসে ১৯৩৪ সালে যখন প্রতি মাসে ৫,০০০ জনকে জোরপূর্বক স্টেরিয়ালাইজড করা হচ্ছিল। তখন সে তার কলিগকে লিখে-
“You will be interested to know that your work has played a powerful part in shaping the opinions of the group of intellectuals who are behind Hitler in this epoch-making program. Everywhere I sensed that their opinions have been tremendously stimulated by American thought... I want you, my dear friend, to carry this thought with you for the rest of your life, that you have really jolted into action a great government of 60 million people.”(২১)
অনুবাদ- “তুমি জেনে ইন্টারেস্টেড হবে যে তোমার কাজ হিটলারের epech-making প্রোগ্রামের পিছনে বুদ্ধিজীবীদের যে গ্রুপটি আছে তাদের মতামতকে আকৃতি দিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। সব জায়গায় আমি উপলব্ধি করেছি যে তাদের চিন্তাধারা চরমভাবে আম্রিকান চিন্তাধারা দ্বারা স্টিমুলেটেড ছিল... আমার প্রিয় বন্ধু, আমি চাই যে তুমি তোমার বাকিটা জীবন এই চিন্তাধারা বহন করবে, তুমি আসলেই ৬০ মিলিয়ন সরকারের একটি মহান সরকারের কার্যক্রমকে হঠাৎই প্রভাবিত করেছো।”
মার্কিন ইউজেনিক্স রিসার্চার Harry H. Laughlin দাবী করে যে তার ইউজেনিক্স স্টেরিলাইজেশন আইনের মডেল ১৯৩৫ সালে নারেমবার্গ রেসিয়াল হাইজিন আইনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়।(২২)
১৯৩৬ সালে লাফলিন জার্মানির Heidelberg University এর পুরস্কার অনুষ্ঠানে Science of Racial Cleansing এর ওপর কাজের জন্য অনারি ডক্টরেট গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ পায়। আর্থিক কারণে উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে না পারলেও রকফেলার ইনস্টিটিউট থেকে তা গ্রহণ করে। সে তার কলিগদের সাথে উক্ত পুরস্কার গর্বের সাথে শেয়ার করে, এবং তার দাবী অনুসারে সে মনে করে ইউজেনিক্সের ক্ষেত্রে জার্মান ও আম্রিকান বিজ্ঞানীদের বুঝ একই।(২৩)
এডউইন ব্ল্যাক নামক এক সাংবাদিক IBM এবং নাৎসি জার্মানির সাথে স্ট্রাটেজিক সম্পর্ক সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছে। বইটির নাম IBM and the Holocaust: The Strategic Alliance between Nazi Germany and America's Most Powerful Corporation। আমি উক্ত বইয়ের সারাংশ এখানে না লিখে শুধুমাত্র একটি বাক্য কৌট করবো, তাতেই আম্রিকার সাথে হিটলারের সম্পর্ক বুঝা হয়ে যাবে।
"without IBM's machinery, continuing upkeep and service, as well as the supply of punch cards, whether located on-site or off-site, Hitler's camps could have never managed the numbers they did."(২৪)
অনুবাদ- “আইবিএমের মেশিনারি, কার্যক্রমে চলমান সাহায্য এবং সেবা, এবং পাঞ্চ কার্ডের সাপ্লাই অন-সাইটে অবস্থিত হোক বা অফ-সাইটে, এসব ছাড়া যে পরিমাণ মানুষ হিটলারের ক্যাম্প ম্যানেজ করেছে তা কখনোই পারতো না।”
এছাড়াও দেখতে পারেন- https://www.theguardian.com/world/2002/mar/29/humanities.highereducation
'
হিটলারকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ধরা হলেও আইবিএমের থমাস ওয়াটসনকে অপরাধী হিসেবে ধরা হয় না। যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলেও সে তার কার্যক্রম চালাতে থাকে। আইবিএম তার পুত্র Thomas Watson Jr এর কাছে হস্তান্তরিত হয়।
♦
বিল গেটসের বাবা Bill Gates SR. কাজ করতো Planned Parenthood(২৬) এ এবং মাতা Mary Maxwell Gates কাজ করতো IBM এর CEO এর সাথে।(২৭)
বিল গেটসের মাইক্রোসফট এবং আইবিএমের সম্পর্ক নতুন কিছু নয়।(২৮) ১৯৮০ সালে আইবিএম এর সাথে মাইক্রোসফট পার্টনারশিপ শুরু করে।(২৯) আপনি কি মনে করেন আইবিএমের মতো বড় কোম্পানি মাইক্রোসফটের মতো তুলনামূলকভাবে দূর্বল ও নতুন কোম্পানির সাথে পার্টনারশিপে যাওয়া কোনো কাকতালীয় ঘটনা?
মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই বিল গেটস গ্লোবাল হেলথকে গ্রাস করে নিয়েছে।
https://www.bitchute.com/video/wQSYdAX_9JY/
বিল গেটস ও ভ্যাক্সিন-
https://www.google.com/amp/s/www.forbes.com/sites/matthewherper/2011/11/02/the-second-coming-of-bill-gates/amp/
ভ্যাক্সিন দিয়ে জনসংখ্যা কমানোর কথা শুনুন বিল গেটসের নিজের মুখে, এবং সাথে একজন ডাক্তারের বক্তব্য - https://youtu.be/_PUKd-DV1w0
বিল গেটস জাতিসংঘের সাথেও জড়িত। সে তাদেরকে যে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে তা অনেক রাষ্ট্রও দেয় না।
১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে জাতিসংঘের Earth Summit প্রকাশিত হয়, যেখানে তারা তাদের পরবর্তী কার্যক্রম পাবলিশ করে ৩০০ পেজের একটি হলুদ রঙের বইতে। বৃক্ষনিধন বন্ধ করা, জেন্ডার ডিস্ক্রিমিনেশন বন্ধ করে সবাইকে শিক্ষা প্রদান করা, দারিদ্যতা দমন, হেলথকেয়ার, মাইক্রোচিপ প্রভৃতি ব্যাপারগুলো আনা হয়েছে।(৩০) সাধারণ দৃষ্টিতে এগুলো দেখতে সহজসরল সুন্দর পরিকল্পনা বলে মনে হতে পারে। কিন্তু তাদের ছোট ভিডিওগুলো দেখার পর আপনার সে ধারণা পালটে যাবে। (৩১) তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে হলে ভ্যাক্সিনেশন, জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ফুড, সেকুলার স্পিরিচুয়ালিটি, মাইক্রোচিপ, ব্যবসা, অর্থনীতি, আইন প্রণয়নসহ সকল ক্ষেত্রে মনোপলি প্রভৃতি প্রয়োগ করতে হবে। না হলে এটি সম্ভব না।
২০০৭ সালে ইউটিউবে পিটার জোসেফ নামক এক অভিশপ্ত ব্যক্তি Zeit Geist Addendum নামক একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম প্রকাশ করে। উক্ত ডকুমেন্টারিতে অকাট্য হিস্টোরিক্যাল রেকর্ডকে অস্বীকার করে সকল আব্রাহামিক ধর্মের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয় খুবই সূক্ষ্ম স্কেলে। অতঃপর পৃথিবীর সমস্যা তুলে ধরে সমাধান হিসেবে টোটালিটারিয়ান ওয়ান ওয়ার্ল্ড ইউটোপিক গভর্নমেন্টকে দেখানো হয়। তারপরের বছরগুলোতে ২০১১ সাল পর্যন্ত একের পর এক ডকুমেন্টারি আসতে থাকে। Zeit Geist শব্দদ্বয়ের অর্থ Age of Spirit, অর্থাৎ শয়তানের যুগ।(৩২)
কাজ্জাবটার অনুসারী বৃদ্ধি পেলে এক সময়ে পিটার জোসেফ তাদেরকে নিয়ে Zeit Geist Movement নামক একটি অর্গানাইজেশন প্রতিষ্ঠা করে। থ্রাইভ মুভমেন্ট এবং উবুন্টু প্ল্যানেট অনুরূপ অর্গানাইজেশন। একই বিষের ভিন্ন ফ্লেভার। প্রবলেম-রিঅ্যাকশন-সলিউশন প্যাটার্নের ডকুমেন্টারিতে সমাধান হিসেবে জ্যাক ফ্রেস্কোর ইউটোপিয়া মডেলকে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু জ্যাক ফ্রেস্কো কে?
জ্যাক ফ্রেস্কো একজন এক্স কমিউনিস্ট। জ্যাক ফ্রেস্কোর মূল কাজ প্রকাশিত হয় ২০০২ সালে, The Best that Money Can't Buy। ২০০৮ সালে জেইটগেইস্টের পিটার জোসেফ তার চিন্তাধারাকে সমাধান হিসেবে দেখায়।(৩৪) ২০১২ সালে Roxanne Meadows ভেনাস প্রজেক্টের লক্ষ্য নিয়ে Paradise or Oblivion নামে একটি নতুন ফিল্ম প্রকাশ করে।(৩৫)
২০১৬ সালের ১৭ জুলাই জাতিসংঘ থেকে ইউটোপিয়ার শহর ডিজাইনের জন্য সম্মাননা দেওয়া হয়। উক্ত সম্মেলনের নাম ছিল নোভাস। (৩৩) আম্রিকার এক ডলার নোটেও নোভাস সংশ্লিষ্ট কিছু লেখা আছে।
ফ্রেস্কোর সাথে সিক্রেট সোসাইটির সম্পর্ক নিয়ে Ernst Fischer এর বক্তব্য-
“"Fresco spoke at the 10th anniversary of the UN's Earth charter last year and subsequently attended Mikael Gorbachevs congress, which you will find on thevenusproject.com hidden away in the Netherlands section. Hell even if for some reason you think rubbing shoulders with those mid level elites is okay, what about frescos co-speaker Ervin Laszlo, (who he "spent time with") who FOUNDED the Club of Budapest, with Aurelio Peccei, founder of the CLUB OF ROME, full of lovely Illuminati globalists, who want a one world order, unified, worshiping the earth, under a new age religion. What about him being invited to dinner in the Dutch queen's palace? As in Queen Beatrix.... of Bilderberg.
Fresco, former member of the Communist party, wrote a book with Ken Keyes a while back. You don't just write a book with someone you barely know, so I might go so far as to say his good friend and colleague Keyes wrote a charming book called Planethood, go look it up. The book speaks not only of how the UN will fix the planet, but how they will install a One World Government "for the earth" Um, no thanks, what about the people? Or does Skynet just see us as more resources in the resource management program?"
ফ্রেস্কো তার Beyond Utopia গ্রন্থে ফ্রিম্যাসনারি, কার্ল মার্ক্স এবংং কার্ল মার্ক্সের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
জেইটগেস্ট মুভমেন্ট থেকে ভেনাস(ভেনাস শব্দটির সমার্থক শব্দ হলো লুসিফার) প্রজেক্ট, এবং জাতিসংঘের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য ফ্রেস্কোকে পুরস্কার প্রদান- এগুলো এটাই প্রমাণ করে যে জাতিসংঘের এজেন্ডা-২১ অথবা এজেন্ডা-৩০গুলো ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টের জন্য পদক্ষেপ ছাড়া আর কিছুই নয়। এসবের সাথে ৫ডি ফেক জান্নাতের ব্যাপারটাও জড়িত যদিও তা এখানে আলোচ্য নয়।
ভেনাস প্রজেক্ট মূলত কমিউনিজমের আরেকটু পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন ভার্সন।(৩৬)
আশা করি জনসংখ্যা কমানোর কারণ ধরতে পেরেছেন।
♦
কাব্বালিস্টিক ডক্ট্রিন চর্চা করে প্লেটোর স্বপ্ন দেখা ইউটোপিয়ার ধারণা থেকে থমাস ম্যালথাস, ডারউইনিজম, ইউজেনিক্স, আইবিএম, বিল গেটস, জেইটগেইস্ট, ফ্রেস্কো এবং অবশেষে ভেনাস প্রজেক্ট- এভাবেই ধারাবাহিকভাবে একই উদ্দেশ্য ঘুরে ফিরে বারবার এসেছে। যারা কাফের ত্বগুতের পথে যুদ্ধ করে, এই বাস্তবতাই আপনি পড়লেন। তাদের রাজনৈতিক মতবাদ, রাষ্ট্রদর্শন এগুলো সব শয়তান ঠিক করে দেয়। ইউজেনিক্সের মাধ্যমে খুনী কাফেরদের নেতারাই আমাদের পবিত্র জিহাদ নিয়ে প্রশ্ন তুলে, ম্যান্ডাটরি স্টেরিলাইজেশন উপহার দেওয়া এই নিকৃষ্ট আদর্শহীন জাতিরাই আমাদেরকে শেখাবে শান্তি কাকে বলে!
আল্লাহ বলেন, “আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফেত্না চুড়ান্ত ভাবে দূরীভূত না হয় এবং দ্বীন একমাত্র আল্লাহ্র জন্য হয়ে যায়। অতঃপর যদি তারা বিরত হয় তবে যালিমরা ছাড়া আর কারও উপর আক্রমণ নেই। “ (সুরা বাকারা,১৯৩)
কাফেররা তাদের টোটালিটারিয়ান ইউটোপিয়া প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবেই, আপনি অসাম্প্রদায়িকতার নামে মুনাফিকি করুন বা না করুন, তারা অস্ত্রের মুখে মিথ্যার সাথে তাদের ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট আপনার ওপর চাপানোর ষড়যন্ত্র করবেই, আপনি যতোই বলুন না কেন ইসলাম কারোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য আসেনি। শিশু গণহত্যাকারী জাতিরা যদি তাদের শয়তানি শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে লজ্জিত না হয় তবে আপনি কেন আল্লাহর আইন চাপিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে লজ্জাবোধ করেন?
“নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদন্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমি আরো নাযিল করেছি লোহা, তাতে প্রচন্ড শক্তি ও মানুষের জন্য বহু কল্যাণ রয়েছে। আর যাতে আল্লাহ জেনে নিতে পারেন, কে না দেখেও তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে সাহায্য করে। অবশ্যই আল্লাহ মহাশক্তিধর, মহাপরাক্রমশালী।” (সুরা হাদীদ, ২৫)
“তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূরকে পূর্ণতাদানকারী। যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে।” (সুরা সফ, ৮)
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমি এই মর্মে আদিষ্ট হয়েছি যে, আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবো যে পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য প্রদান করে যে, আল্লাহ ছাড়া কেউ উপাস্য নেই ও মুহাম্মাদ (সঃ) আল্লাহর রাসূল এবং তারা সালাত প্রতিষ্ঠিত করে ও যাকাত দেয়।”
_____
(১) http://grahamhancock.com/phorum/read.php?6,876793,876862
(২) https://www.nytimes.com/2011/07/14/opinion/14iht-edminois14.html
(৩) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৭; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৪) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৮; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৫) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৮; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৬) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৮; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৭) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৮-২৪৯; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৮) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৬; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৯) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৫৮; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(১০) https://historycollection.co/population-control-was-no-joke-in-ancient-greece-and-the-roman-empire/11/
(১১) https://en.m.wikipedia.org/wiki/An_Essay_on_the_Principle_of_Population
(১২) Barlow, Nora 1958. The autobiography of Charles Darwin. p. 128
(১৩) Wallace, Alfred Russel 1908. My life: a record of events and opinions.
(১৪) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Eugenics
(১৫) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Infanticide
(১৬) https://m.theepochtimes.com/mass-baby-grave-discovered-under-ancient-roman-bathhouse_1154172.html
(১৭) https://en.m.wikipedia.org/wiki/History_of_eugenics#CITEREFLarson2004
(১৮) Galton, Hereditary Genius: 1
(১৯) https://archive.org/details/memoriesmylife00galtgoog
(২০) https://books.google.com.bd/books?id=xKjqCQAAQBAJ&lpg=PP1&pg=PA9&redir_esc=y#v=onepage&q&f=false
(২১) https://www.sfgate.com/opinion/article/Eugenics-and-the-Nazis-the-California-2549771.php
(২২) https://books.google.com.bd/books?id=G-crlAYsZ-MC&pg=PA123&redir_esc=y#v=onepage&q&f=false
(২৩) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Harry_H._Laughlin
(২৪) https://en.m.wikipedia.org/wiki/IBM_and_the_Holocaust
(২৫) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Francis_Galton
(২৬) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Bill_Gates_Sr.
(২৭) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Mary_Maxwell_Gates
(২৮) https://sites.google.com/site/billgates9004/ibm
(২৯) https://en.m.wikipedia.org/wiki/History_of_Microsoft
(৩০) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Agenda_21
(৩১) https://youtu.be/0CDZiR3yGtI
(৩২) https://rationalwiki.org/wiki/Zeitgeist
(৩৩) https://youtu.be/pzIe3S0eFRc
https://www.thevenusproject.com/united-nations-award-given-jacque-fresco-city-designcommunity/?fbclid=IwAR2R1XC3g3oRldce7qTp3sV26Hog8Pq-VroMpsJjf6NoBPKjwTuzvfWwOXI
(৩৪) https://m.orlandoweekly.com/orlando/the-view-from-venus/Content?oid=2248863
(৩৫) http://www.prweb.com/releases/2012/4/prweb9403518.htm
(৩৬) https://youtu.be/2ApQSGezJBc
.
প্লেটোর রাষ্ট্রদর্শন মূলত টোটালিটারিয়ান ইউটোপিয়া, যেখানে ব্যক্তিগত থেকে শুরু করে সামাজিক জীবন পর্যন্ত সকল ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রিত করা হবে রাষ্ট্র কর্তৃক। উক্ত ইউটোপিক রাষ্ট্রের অধিবাসীরা তিন স্তরের। গার্ডিয়ান, সোলজার এবং সাধারণ জনগণ। গার্ডিয়ান হলো রাষ্ট্রের উচ্চস্তরের সাথে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ এবং সৈনিকদের মর্যাদা সাধারণ জনগণ থেকে উপরে। সব থেকে নিম্নশ্রেণীর অধিবাসীরা হলো যারা কায়িক শ্রম করবে। রাজা হবে ফিলোসফার (বিজ্ঞানী)। প্লেটোর রাষ্ট্রদর্শনে প্রভাবিত হয়েছে অনেক আইডিওলজি। মুরতাদ জাফর ইকবালের অনেক সাইন্স ফিকশন বইয়ে যে টোটালিটারিয়ান ওয়ার্ল্ডে যে “বিজ্ঞান আকাদেমি“র খোজ মেলে তা গার্ডিয়ান শ্রেণীর।
আমি প্লেটোর রিপাবলিক বই থেকে পপুলেশন কন্ট্রোল ও বিবাহ সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে ধরছি।
• “অভিভাবক বা শাসকদের নিকৃষ্ট এবং বিকলাঙ্গ সন্তানদের নিঃশব্দে অপসারিত করার ব্যবস্থা করা হবে।*
গ্লুকন বললেনঃ হ্যা, শাসকদের বংশধারা বিশুদ্ধ রাখতে হলে এ কাজটি অবশ্যই করতে হবে।
...
...
*এখানে অবাঞ্ছিত ও নিকৃষ্ট শিশুদের নষ্ট করার প্রস্তাবের আভাস পাওয়া যায়।” (৩)
এমনকি বর্তমান রাষ্ট্রের মতো বিবাহের বয়সকে নির্ধারণ করে দিয়েছে।
• “সক্রেটিস, কোন বয়সকে তুমি নির্দিষ্ট করতে চাও?
আমি বললামঃ মেয়েদের ক্ষেত্রে মেয়েরা বিশ বৎসর বয়সে রাষ্ট্রের জন্য সন্তানধারণ করতে শুরু করবে এবং চল্লিশ বৎসর পর্যন্ত সন্তানধারণ করবে। পুরুষদের বেলা পঁচিশ বৎসর যখন তার জীবনের দ্রুততম স্পন্দনের মুহূর্ত অতিক্রান্ত হয়েছে তখন থেকে পঞ্চান্ন বৎসর পর্যন্ত পুরুষ, সন্তানের জন্মদান করতে পারবে।” (৪)
বর্তমানে যেমন সঠিক সময়ে বিবাহ করলে তাকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়, ঠিক এইরকমই প্রস্তাব উক্ত বইয়ে লিখিত আছে।
• “আমাদের নির্দিষ্ট এই বয়ঃসীমার পূর্বে কিংবা পরে কেউ যদি রাষ্ট্রের বিবাহ উৎসবে যোগদান করে তা হলে তাকে অপবিত্র এবং অন্যায় বলে গণ্য করা হবে। এরূপ নিষিদ্ধ মিলনের সন্তানকে অপবিত্র বলে গণ্য করা হবে।” (৫)
• “এবং এই নির্ধারিত বয়সের মধ্যেও শাসকদের অনুমোদন ব্যতীত কোনো পুরুষ যদি কোনো নারীর সঙ্গে মিলিত হয় তা হলে তার ওপরও এই বিধান প্রয়োগ করা হবে। তার বিরুদ্ধেও আমাদের অভিযোগ হবে, সে রাষ্ট্রের জন্য অবৈধ, অননুমোদিত এবং অপবিত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছে।”(৬)
যদি রাষ্ট্রের অনুমতি ছাড়া সন্তান আসে তবে সমাধান হিসেবে অ্যাবরশন এবং নবজাতককে হত্যা করার প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে।
• “এ নিষেশ সত্ত্বেও যদি কোনো অবৈধ সন্তান জন্মগ্রহণ করে তবে এমন সন্তানকে যে, রাষ্ট্র প্রতিপালন করবে না, এ-সত্য পিতামাতার উপলব্ধি করতে হবে। এবং এ-সন্তানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা তাদের গ্রহণ করতে হবে।*
...
...
*এখানে প্লেটো অননুমোদিত ভ্রুণের গর্ভপাত এবং অননুমোদিত শিশুর জীবননাশের প্রস্তাব করেছেন।”(৭)
পপুলেশন কন্ট্রোলের প্রস্তাবনা-
• “আর এক্ষেত্রে লক্ষ্য হবে নগরীর লোকসংখ্যার গড় যাতে রক্ষিত হয়। এজন্য লোকসংখ্যার ওপর যুদ্ধ, রোগ এবং অনুরূপ অন্যান্য আপদের প্রভাবের কথা বিবেচনা করতে হবে। মোটকথা, রাষ্ট্রের লোকসংখ্যা অত্যধিক বেশি কিংবা অত্যধিক কমে পরিণত না হয়ে যায় তার যথাসম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”(৮)
নারী-পুরুষের কথিত সমঅধিকার-
•“সে যাহোক, গ্লকন, তুমি আমার সঙ্গে একমত; আমরা যেরূপ বলেছি, আমাদের রাষ্ট্রে পুরুষ এবং মেয়েদের জীবনপদ্ধতি হবে একই। একই প্রকার শিক্ষা তারা লাভ করবে, তাদের সন্তান হবে যৌথ সন্তান এবং নগর রক্ষায় কিংবা যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের উভয়ের দায়িত্ব এক। একসঙ্গেই তারা নগর প্রহরায় নিযুক্ত থাকবে, কুকুরের ন্যায় এক সঙ্গেই তারা শিকারের সন্ধানে বহির্গত হবে। মোটকথা শারীরিক গঠনে যতদূর সম্ভব মেয়েদের দায়িত্ব পুরুষের সমান হবে, এবং যৌথ জীবনে যা মহৎ তা তারা উভয়েই সাধন করবে।”(৯)
এছাড়া সিলেক্টিভ ব্রিডিং এর কথাও প্লেটো বলেছিল।(১৪)
কিছু ব্যাপারে দ্বিমত করা সত্ত্বেও অ্যারিস্টটলও পপুলেশন কন্ট্রোলের স্বপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল।(১০)
রোম, স্পার্টা, চীন এবং এথেন্সে ইনফ্যান্টিসাইড প্রচলিত ছিল।(১৫)
এমনকি প্রাচীন রোমান বাথহাউজের নিচে ইনফ্যান্টিসাইডের শিকার নিষ্পাপ শিশুদের গণকবরও আবিষ্কৃত হয়েছে।(১৬)
তারমানে দেখা যাচ্ছে অভাবের অযুহাত দেখিয়ে শিশু হত্যা শুধু আরবরাই করতো না, বরং ইসলামের আলোহীন অন্ধকার সকল সভ্যতার মাঝেও বিদ্যমান ছিল।
আল্লাহ বলেন, “শয়তান তোমাদেরকে দরিদ্রতার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং অশ্লীল কাজের আদেশ করে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে তার পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।” (সুরা বাক্বারা, ২৬৮)
“তোমাদের সন্তানদেরকে তোমরা দারিদ্র্য-ভয়ে হত্যা করো না, আমিই তাদেরকে জীবনোপকরণ দিয়ে থাকি এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ।” (সুরা ইসরা, ৩১)
আল্লাহর ওয়াদা সত্য, শয়তানের ওয়াদা প্রতারণা। যে সময়ে গ্রিস, রোম, চীন, আরবে ইনফ্যান্টিসাইড প্রচলিত ছিল সে সময়ে পৃথিবীর সর্বমোট জনসংখ্যা ছিল মাত্র কয়েক মিলিয়ন। তারা সে সময়েই রিসোর্স/রিযক স্বল্পতার অভিযোগে শিশুদের হত্যা করে আসছে, অথচ বর্তমানে ৭০০ কোটি জনসংখ্যা কি বেচে নেই? আল্লাহ কি বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষকে রিযক দিচ্ছেন না? যেসব অঞ্চলে দূর্ভিক্ষ হচ্ছে তা তো কাফেরদের নির্মিত কৃত্রিম কারণে, রিসোর্সের অভাবে নয়। বস্তুত অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো এবারও শয়তানের প্রতিশ্রুতি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে, এবং আল্লাহর ওয়াদা সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ(র) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, “সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম, এটা অবশ্যই বড় কিন্তু তারপর কি? তিনি বললেন, এবং তোমার সাথে খাবে এ ভয়ে তোমার সন্তানকে হত্যা করা”। [বুখারীঃ ৪৪৭৭]
♦
রেনেসার আফটারম্যাথ হিসেবে ইউরোপে ফিলোসফারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তেমনই একজন হলো থমাস রবার্ট ম্যালথাস। ১৭৯৮ থেকে ১৮২৬ এর মধ্যে মোট ছয় সংস্করণের একটি ট্রিটাইজ পাবলিশ করে যার নাম ‘An Essay on the Principle of Population’। উক্ত বইটিতে এমন অনেক কিছু ছিল যা পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ও সংগঠনকে খুব বিস্তররূপে প্রভাবিত করে। ম্যালথাস বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ দ্বারা প্রভাবিত ছিল, যেমন ব্রেঞ্জামিন ফ্র্যাংকলিন, ডেভিড হিউম, রবার্ট ওয়ালেস, অ্যাডাম স্মিথ, রিচার্ড প্রাইস প্রভৃতি।
ম্যালথাসিয়ানিজম অনুযায়ী সময়ের সাথে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে জনসংখ্যার অনুপাতে মোট রিসোর্সের পরিমাণ হ্রাস পায়। অতএব বেচে থাকার জন্য সমাধান হলো জনসংখ্যা কমানো। আপাত দৃষ্টিতে হয়তো সবাই শুভঙ্করের ফাকিটা বুঝতে পারবে না। জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে সময়ের সাথে সাথে এটিই নিয়ম এবং মানুষের ফিতরাত। আল্লাহ মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী রিসোর্স জমীনে ছড়িয়ে রেখেছেন এবং সেই রিসোর্স যাতে শর্ট না পড়ে এজন্য লাইফকোড দিয়েছেন। কিন্তু কাফেররা তাদের মনগড়া ইকোনমি দিয়ে দেশ শাসন করে, যার ফলে দেশে দারিদ্র্যতা বৃদ্ধি পায়। এ কারণে তারা জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে এবং রিসোর্সের স্বল্পতাকে দায়ী করে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তাদের দারিদ্রতার কারণ তাদের মনগড়া ইকোনমি, সেটা ইম্পেরিয়ালিজম হোক বা কমিউনিজম বা সোশ্যালিজম। তারা বিভিন্ন প্রাচীন রাষ্ট্রের উদাহরণ দেখিয়ে বলে স্বল্প রিসোর্স ও অত্যধিক জনসংখ্যার কারণে দারিদ্র্যতা ছিল, কিন্তু কখনোই ইসলামি খেলাফতে ইসলামি অর্থনীতির কারণে সদা জনসংখ্যা বৃদ্ধিকারী জাতির দারিদ্র্যতাহীন সমৃদ্ধিকে পেশ করবে না। প্রবলেম - রিঅ্যাকশন - সলিউশন মেথড অনুসরণ করার কারণে তারা নিজেরাই নিজেদের নির্মিত রাষ্ট্রকাঠামোকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর ব্যর্থ হিসেবে চিহ্নিত করে নতুন আরেকটি রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো নিয়ে এসে নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের আরো কাছে চলে যায়। ম্যাকিয়াভেলির প্রিন্স বইয়ের প্রভাবে আধুনিক সেকুলার জাতিরাষ্ট্র এর জন্ম হয়, আবার বর্তমানে সেটাকে ব্যর্থ হিসেবে চিহ্নিত করে গ্লোবাল ভিলেজ অর্থাৎ ইউটোপিয়াকে সমাধান হিসেবে দেখাচ্ছে দ্য ভেনাস প্রজেক্ট। এসব কিছুই প্রিপ্ল্যানড।
ম্যালথাস সমাধান হিসেবে দাবী করে দু ধরণের কার্যক্রম অনুসরণ করলে রিসোর্সের হিসাব অনুযায়ী জনসংখ্যা হ্রাস করা যায়। একটি হলো বার্থরেট কমানো, অন্যটি হলো মৃত্যুহার অধিকহারে বৃদ্ধি করা। তার দাবী মতে দ্বিতীয়টি অলরেডি শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রিভেন্টিভ চেক হিসেবে সে বার্থ কন্ট্রোল, বিয়ে পিছিয়ে দেওয়া এবং অবিবাহিতদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার প্রস্তাবনা পেশ করেছে। মৃত্যুহার বৃদ্ধি করার জন্য ক্ষুদা, রোগবালাই এবং যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেছে।(১১)
ম্যালথাসিয়ানিজম যেমন সমাদৃত হয়েছে তেমনই অনেকের কাছে সমালোচিতও হয়েছে। ভারতবর্ষের ওপর ব্রিটিশদের কলোনিয়াল শাসন তার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। আরেক ফ্রিম্যাসন ডারউইন, যার সম্পর্কে আগে বিস্তারিত বলেছি, সে ম্যালথাসকে ‘গ্রেট ফিলোসফার’ বলে অভিহিত করেছে। চার্লস ডারউইন এবং আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস দুজনেই তাদের আইডিয়া ডেভলপের জন্য ম্যালথাসের কাছে ঋণী হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। ন্যাচারাল সিলেকশন কন্সেপ্ট ডেভলপ করতে ম্যালথাসের বইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
ডারউইন লিখেছে- "In October 1838 ... I happened to read for amusement Malthus on Population ... it at once struck me that under these circumstances favourable variations would tend to be preserved, and unfavourable ones to be destroyed. The result of this would be the formation of new species." (১২)
আলফ্রাড রাসেল ওয়ালেস- "But perhaps the most important book I read was Malthus's Principles of Population ... It was the first great work I had yet read treating of any of the problems of philosophical biology, and its main principles remained with me as a permanent possession, and twenty years later gave me the long-sought clue to the effective agent in the evolution of organic species.” (১৩)
ডারউইনের অরিজিন অফ স্পেসিস পড়ার পর তার অর্ধ-কাজিন ‘স্যার’ ফ্রান্সিস গ্যালটন তার পূর্ববতীদের আইডিয়াগুলোকে একটি অর্গানাইজড শাস্ত্ররূপে নিয়ে আসে। উক্ত বিদ্যার নাম Eugenics। গ্যালটন একজন ফ্রিম্যাসন ছিল।(২৫) ইউজেনিক্স শব্দটি প্রথম ইউজ করে ১৮৮৩ সালে, Inquiries into Human Faculty and Its Development নামক বইয়ে।
গ্যালটন ডারউইনের থিওরী দ্বারা প্রভাবিত ছিল। ১৮৬৫ সালে "Hereditary Talent and Character" এবং পরবর্তীতে ১৮৬৯ সালে "Hereditary Genius" রচনা করে।(১৭) গ্যালটন সিলেক্টিভ ব্রিডিং এর ধারণা মানুষের ওপর প্রয়োগের প্রস্তাবনা পেশ করে Hereditary Genius এর ইন্ট্রোডাকশনে।
গ্যালটনের বক্তব্য- “......so it would be quite practicable to produce a highly gifted race of men by judicious marriages during several consecutive generations.“(১৮)
অনুবাদ- “... সুতরাং প্রজন্মের পর প্রজন্মে নির্বাচিত বিবাহের মাধ্যমে মানুষের একটি উন্নত জাত উৎপাদন সম্পূর্ণ প্রয়োগযোগ্য।“
১৯০৮ সালে, “Memories of My Life” এ গ্যালটন ইউজেনিক্সের অফিসিয়াল সংজ্ঞা প্রদান করে।
"the study of agencies under social control that may improve or impair the racial qualities of future generations, either physically or mentally"(১৯)
ইউজেনিক্সের দুটি ক্যাটাগরি, পজিটিভ ইউজেনিক্স এবং নেগেটিভ ইউজেনিক্স। পজিটিভ ইউজেনিক্স বলতে বুঝায় উন্নত বৈশিষ্ট্যাবলী মানূষদের রিপ্রোডাকশন বৃদ্ধি করা। নেগেটিভ বুঝায় নিচুস্তরের মানুষদের রিপ্রোডাকশন কমানো। নেগেটিভ ইউজেনিক্স পলিসি হিসেবে ফোর্স স্টেরিলাইজেশন কার্যক্রমের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এমনকি কখনো কখনো গণহত্যাও। পরবর্তীতে যেটা সোশ্যাল ডারউইনিজম নামে পরিচিতি লাভ করে তার সঙ্গে ইউজেনিক্স সুপারফিশিয়ালী রিলেটেড।
চার্লস ড্যাভেনপোর্ট একজন আম্রিকান বিজ্ঞানী, ইতিহাসের নেতা পর্যায়ের ইউজিনিসিস্ট। ইউজেনিক্সকে সাইন্টিফিক থিওরী থেকে তা বাস্তবায়নের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। তার পলিসি অনেক দেশে বাস্তবায়িতও হয়েছে। ড্যাভেনপোর্ট Carnegie Institution থেকে ফান্ড পেয়ে ১৯০৪ সালে Cold Spring Harbor ইনস্টিটিউশনে Station for Experimental Evolution এবং ১৯১০ সালে ইউজেনিক্স রেকর্ড অফিস প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে এগুলো এনফোর্সড স্টেরিলাজেশনের মতো জঘন্য কার্যক্রমের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রদান করে। ড্যাভেনপোর্ট International Federation of Eugenics Organization(IFEO) এর প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়।
১৯৩২ সালে ড্যাভেনপোর্ট Ernst Rudin কে তার উত্তরাধিকার হিসেবে IFEO এর প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করে, যে একাধারে স্বনামধন্য সুইস ইউজেনিসিস্ট এবং রেইস সাইন্টিস্ট। রুডিন German Research Institute for Psychiatry এর ডিরেক্টর এবং German Society for Racial Hugiene এর কো-ফাউন্ডার। কায়সার উইলহেম ইন্সটিটিউটের সাথেও সে যুক্ত ছিল। এছাড়াও আরো অনেক স্বনামধন্য ইউজেনিস্ট যেমন Harry Laughlin, Havelock Ellis, Irving Fischer, Eugen Fischer, Madison Grant, Lucien Howe এবং Margaret Sangerb প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। মারগ্যারেট New York Health Clinic এর প্রতিষ্ঠাতা, যা পরবর্তীতে Planned Parenthood এ রূপ নেয়।
আম্রিকার ইউজেনিক্স মুভমেন্টের প্রভাব জার্মানিতেও গিয়ে পড়ে। German Society for Racial Hygiene এর আন্ডারে সকল ইউজেনিসিস্ট এবং সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা ঐক্যবদ্ধ ছিল, অপরদিকে আম্রিকার ইউজেনিক্স মুভমেন্ট ছিল নানা পথে বিভক্ত।(২০)
আম্রিকান রকফেলার ফাউন্ডেশনের গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সহায়তায় ১৯২৭ সালে জার্মানির বার্লিনে Kaiser Wilhelm Institute for Anthropology (KWIA) প্রতিষ্ঠিত হয়। ক্যালিফোর্নিয়া ইউজেনিক্স লিডার C.M. Goethe জার্মানি থেকে ফিরে আসে ১৯৩৪ সালে যখন প্রতি মাসে ৫,০০০ জনকে জোরপূর্বক স্টেরিয়ালাইজড করা হচ্ছিল। তখন সে তার কলিগকে লিখে-
“You will be interested to know that your work has played a powerful part in shaping the opinions of the group of intellectuals who are behind Hitler in this epoch-making program. Everywhere I sensed that their opinions have been tremendously stimulated by American thought... I want you, my dear friend, to carry this thought with you for the rest of your life, that you have really jolted into action a great government of 60 million people.”(২১)
অনুবাদ- “তুমি জেনে ইন্টারেস্টেড হবে যে তোমার কাজ হিটলারের epech-making প্রোগ্রামের পিছনে বুদ্ধিজীবীদের যে গ্রুপটি আছে তাদের মতামতকে আকৃতি দিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। সব জায়গায় আমি উপলব্ধি করেছি যে তাদের চিন্তাধারা চরমভাবে আম্রিকান চিন্তাধারা দ্বারা স্টিমুলেটেড ছিল... আমার প্রিয় বন্ধু, আমি চাই যে তুমি তোমার বাকিটা জীবন এই চিন্তাধারা বহন করবে, তুমি আসলেই ৬০ মিলিয়ন সরকারের একটি মহান সরকারের কার্যক্রমকে হঠাৎই প্রভাবিত করেছো।”
মার্কিন ইউজেনিক্স রিসার্চার Harry H. Laughlin দাবী করে যে তার ইউজেনিক্স স্টেরিলাইজেশন আইনের মডেল ১৯৩৫ সালে নারেমবার্গ রেসিয়াল হাইজিন আইনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়।(২২)
১৯৩৬ সালে লাফলিন জার্মানির Heidelberg University এর পুরস্কার অনুষ্ঠানে Science of Racial Cleansing এর ওপর কাজের জন্য অনারি ডক্টরেট গ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ পায়। আর্থিক কারণে উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে না পারলেও রকফেলার ইনস্টিটিউট থেকে তা গ্রহণ করে। সে তার কলিগদের সাথে উক্ত পুরস্কার গর্বের সাথে শেয়ার করে, এবং তার দাবী অনুসারে সে মনে করে ইউজেনিক্সের ক্ষেত্রে জার্মান ও আম্রিকান বিজ্ঞানীদের বুঝ একই।(২৩)
এডউইন ব্ল্যাক নামক এক সাংবাদিক IBM এবং নাৎসি জার্মানির সাথে স্ট্রাটেজিক সম্পর্ক সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছে। বইটির নাম IBM and the Holocaust: The Strategic Alliance between Nazi Germany and America's Most Powerful Corporation। আমি উক্ত বইয়ের সারাংশ এখানে না লিখে শুধুমাত্র একটি বাক্য কৌট করবো, তাতেই আম্রিকার সাথে হিটলারের সম্পর্ক বুঝা হয়ে যাবে।
"without IBM's machinery, continuing upkeep and service, as well as the supply of punch cards, whether located on-site or off-site, Hitler's camps could have never managed the numbers they did."(২৪)
অনুবাদ- “আইবিএমের মেশিনারি, কার্যক্রমে চলমান সাহায্য এবং সেবা, এবং পাঞ্চ কার্ডের সাপ্লাই অন-সাইটে অবস্থিত হোক বা অফ-সাইটে, এসব ছাড়া যে পরিমাণ মানুষ হিটলারের ক্যাম্প ম্যানেজ করেছে তা কখনোই পারতো না।”
এছাড়াও দেখতে পারেন- https://www.theguardian.com/world/2002/mar/29/humanities.highereducation
'
হিটলারকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ধরা হলেও আইবিএমের থমাস ওয়াটসনকে অপরাধী হিসেবে ধরা হয় না। যুদ্ধ শেষ হয়ে গেলেও সে তার কার্যক্রম চালাতে থাকে। আইবিএম তার পুত্র Thomas Watson Jr এর কাছে হস্তান্তরিত হয়।
♦
বিল গেটসের বাবা Bill Gates SR. কাজ করতো Planned Parenthood(২৬) এ এবং মাতা Mary Maxwell Gates কাজ করতো IBM এর CEO এর সাথে।(২৭)
বিল গেটসের মাইক্রোসফট এবং আইবিএমের সম্পর্ক নতুন কিছু নয়।(২৮) ১৯৮০ সালে আইবিএম এর সাথে মাইক্রোসফট পার্টনারশিপ শুরু করে।(২৯) আপনি কি মনে করেন আইবিএমের মতো বড় কোম্পানি মাইক্রোসফটের মতো তুলনামূলকভাবে দূর্বল ও নতুন কোম্পানির সাথে পার্টনারশিপে যাওয়া কোনো কাকতালীয় ঘটনা?
মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই বিল গেটস গ্লোবাল হেলথকে গ্রাস করে নিয়েছে।
https://www.bitchute.com/video/wQSYdAX_9JY/
বিল গেটস ও ভ্যাক্সিন-
https://www.google.com/amp/s/www.forbes.com/sites/matthewherper/2011/11/02/the-second-coming-of-bill-gates/amp/
ভ্যাক্সিন দিয়ে জনসংখ্যা কমানোর কথা শুনুন বিল গেটসের নিজের মুখে, এবং সাথে একজন ডাক্তারের বক্তব্য - https://youtu.be/_PUKd-DV1w0
বিল গেটস জাতিসংঘের সাথেও জড়িত। সে তাদেরকে যে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে তা অনেক রাষ্ট্রও দেয় না।
১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে জাতিসংঘের Earth Summit প্রকাশিত হয়, যেখানে তারা তাদের পরবর্তী কার্যক্রম পাবলিশ করে ৩০০ পেজের একটি হলুদ রঙের বইতে। বৃক্ষনিধন বন্ধ করা, জেন্ডার ডিস্ক্রিমিনেশন বন্ধ করে সবাইকে শিক্ষা প্রদান করা, দারিদ্যতা দমন, হেলথকেয়ার, মাইক্রোচিপ প্রভৃতি ব্যাপারগুলো আনা হয়েছে।(৩০) সাধারণ দৃষ্টিতে এগুলো দেখতে সহজসরল সুন্দর পরিকল্পনা বলে মনে হতে পারে। কিন্তু তাদের ছোট ভিডিওগুলো দেখার পর আপনার সে ধারণা পালটে যাবে। (৩১) তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে হলে ভ্যাক্সিনেশন, জেনেটিক্যালি মডিফায়েড ফুড, সেকুলার স্পিরিচুয়ালিটি, মাইক্রোচিপ, ব্যবসা, অর্থনীতি, আইন প্রণয়নসহ সকল ক্ষেত্রে মনোপলি প্রভৃতি প্রয়োগ করতে হবে। না হলে এটি সম্ভব না।
২০০৭ সালে ইউটিউবে পিটার জোসেফ নামক এক অভিশপ্ত ব্যক্তি Zeit Geist Addendum নামক একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম প্রকাশ করে। উক্ত ডকুমেন্টারিতে অকাট্য হিস্টোরিক্যাল রেকর্ডকে অস্বীকার করে সকল আব্রাহামিক ধর্মের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয় খুবই সূক্ষ্ম স্কেলে। অতঃপর পৃথিবীর সমস্যা তুলে ধরে সমাধান হিসেবে টোটালিটারিয়ান ওয়ান ওয়ার্ল্ড ইউটোপিক গভর্নমেন্টকে দেখানো হয়। তারপরের বছরগুলোতে ২০১১ সাল পর্যন্ত একের পর এক ডকুমেন্টারি আসতে থাকে। Zeit Geist শব্দদ্বয়ের অর্থ Age of Spirit, অর্থাৎ শয়তানের যুগ।(৩২)
কাজ্জাবটার অনুসারী বৃদ্ধি পেলে এক সময়ে পিটার জোসেফ তাদেরকে নিয়ে Zeit Geist Movement নামক একটি অর্গানাইজেশন প্রতিষ্ঠা করে। থ্রাইভ মুভমেন্ট এবং উবুন্টু প্ল্যানেট অনুরূপ অর্গানাইজেশন। একই বিষের ভিন্ন ফ্লেভার। প্রবলেম-রিঅ্যাকশন-সলিউশন প্যাটার্নের ডকুমেন্টারিতে সমাধান হিসেবে জ্যাক ফ্রেস্কোর ইউটোপিয়া মডেলকে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু জ্যাক ফ্রেস্কো কে?
জ্যাক ফ্রেস্কো একজন এক্স কমিউনিস্ট। জ্যাক ফ্রেস্কোর মূল কাজ প্রকাশিত হয় ২০০২ সালে, The Best that Money Can't Buy। ২০০৮ সালে জেইটগেইস্টের পিটার জোসেফ তার চিন্তাধারাকে সমাধান হিসেবে দেখায়।(৩৪) ২০১২ সালে Roxanne Meadows ভেনাস প্রজেক্টের লক্ষ্য নিয়ে Paradise or Oblivion নামে একটি নতুন ফিল্ম প্রকাশ করে।(৩৫)
২০১৬ সালের ১৭ জুলাই জাতিসংঘ থেকে ইউটোপিয়ার শহর ডিজাইনের জন্য সম্মাননা দেওয়া হয়। উক্ত সম্মেলনের নাম ছিল নোভাস। (৩৩) আম্রিকার এক ডলার নোটেও নোভাস সংশ্লিষ্ট কিছু লেখা আছে।
ফ্রেস্কোর সাথে সিক্রেট সোসাইটির সম্পর্ক নিয়ে Ernst Fischer এর বক্তব্য-
“"Fresco spoke at the 10th anniversary of the UN's Earth charter last year and subsequently attended Mikael Gorbachevs congress, which you will find on thevenusproject.com hidden away in the Netherlands section. Hell even if for some reason you think rubbing shoulders with those mid level elites is okay, what about frescos co-speaker Ervin Laszlo, (who he "spent time with") who FOUNDED the Club of Budapest, with Aurelio Peccei, founder of the CLUB OF ROME, full of lovely Illuminati globalists, who want a one world order, unified, worshiping the earth, under a new age religion. What about him being invited to dinner in the Dutch queen's palace? As in Queen Beatrix.... of Bilderberg.
Fresco, former member of the Communist party, wrote a book with Ken Keyes a while back. You don't just write a book with someone you barely know, so I might go so far as to say his good friend and colleague Keyes wrote a charming book called Planethood, go look it up. The book speaks not only of how the UN will fix the planet, but how they will install a One World Government "for the earth" Um, no thanks, what about the people? Or does Skynet just see us as more resources in the resource management program?"
ফ্রেস্কো তার Beyond Utopia গ্রন্থে ফ্রিম্যাসনারি, কার্ল মার্ক্স এবংং কার্ল মার্ক্সের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
জেইটগেস্ট মুভমেন্ট থেকে ভেনাস(ভেনাস শব্দটির সমার্থক শব্দ হলো লুসিফার) প্রজেক্ট, এবং জাতিসংঘের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য ফ্রেস্কোকে পুরস্কার প্রদান- এগুলো এটাই প্রমাণ করে যে জাতিসংঘের এজেন্ডা-২১ অথবা এজেন্ডা-৩০গুলো ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টের জন্য পদক্ষেপ ছাড়া আর কিছুই নয়। এসবের সাথে ৫ডি ফেক জান্নাতের ব্যাপারটাও জড়িত যদিও তা এখানে আলোচ্য নয়।
ভেনাস প্রজেক্ট মূলত কমিউনিজমের আরেকটু পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন ভার্সন।(৩৬)
আশা করি জনসংখ্যা কমানোর কারণ ধরতে পেরেছেন।
♦
কাব্বালিস্টিক ডক্ট্রিন চর্চা করে প্লেটোর স্বপ্ন দেখা ইউটোপিয়ার ধারণা থেকে থমাস ম্যালথাস, ডারউইনিজম, ইউজেনিক্স, আইবিএম, বিল গেটস, জেইটগেইস্ট, ফ্রেস্কো এবং অবশেষে ভেনাস প্রজেক্ট- এভাবেই ধারাবাহিকভাবে একই উদ্দেশ্য ঘুরে ফিরে বারবার এসেছে। যারা কাফের ত্বগুতের পথে যুদ্ধ করে, এই বাস্তবতাই আপনি পড়লেন। তাদের রাজনৈতিক মতবাদ, রাষ্ট্রদর্শন এগুলো সব শয়তান ঠিক করে দেয়। ইউজেনিক্সের মাধ্যমে খুনী কাফেরদের নেতারাই আমাদের পবিত্র জিহাদ নিয়ে প্রশ্ন তুলে, ম্যান্ডাটরি স্টেরিলাইজেশন উপহার দেওয়া এই নিকৃষ্ট আদর্শহীন জাতিরাই আমাদেরকে শেখাবে শান্তি কাকে বলে!
আল্লাহ বলেন, “আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফেত্না চুড়ান্ত ভাবে দূরীভূত না হয় এবং দ্বীন একমাত্র আল্লাহ্র জন্য হয়ে যায়। অতঃপর যদি তারা বিরত হয় তবে যালিমরা ছাড়া আর কারও উপর আক্রমণ নেই। “ (সুরা বাকারা,১৯৩)
কাফেররা তাদের টোটালিটারিয়ান ইউটোপিয়া প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবেই, আপনি অসাম্প্রদায়িকতার নামে মুনাফিকি করুন বা না করুন, তারা অস্ত্রের মুখে মিথ্যার সাথে তাদের ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট আপনার ওপর চাপানোর ষড়যন্ত্র করবেই, আপনি যতোই বলুন না কেন ইসলাম কারোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য আসেনি। শিশু গণহত্যাকারী জাতিরা যদি তাদের শয়তানি শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দিতে লজ্জিত না হয় তবে আপনি কেন আল্লাহর আইন চাপিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে লজ্জাবোধ করেন?
“নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদন্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে। আমি আরো নাযিল করেছি লোহা, তাতে প্রচন্ড শক্তি ও মানুষের জন্য বহু কল্যাণ রয়েছে। আর যাতে আল্লাহ জেনে নিতে পারেন, কে না দেখেও তাঁকে ও তাঁর রাসূলদেরকে সাহায্য করে। অবশ্যই আল্লাহ মহাশক্তিধর, মহাপরাক্রমশালী।” (সুরা হাদীদ, ২৫)
“তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর নূরকে পূর্ণতাদানকারী। যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে।” (সুরা সফ, ৮)
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ “আমি এই মর্মে আদিষ্ট হয়েছি যে, আমি লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবো যে পর্যন্ত না তারা সাক্ষ্য প্রদান করে যে, আল্লাহ ছাড়া কেউ উপাস্য নেই ও মুহাম্মাদ (সঃ) আল্লাহর রাসূল এবং তারা সালাত প্রতিষ্ঠিত করে ও যাকাত দেয়।”
_____
(১) http://grahamhancock.com/phorum/read.php?6,876793,876862
(২) https://www.nytimes.com/2011/07/14/opinion/14iht-edminois14.html
(৩) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৭; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৪) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৮; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৫) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৮; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৬) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৮; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৭) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৮-২৪৯; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৮) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৪৬; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(৯) প্লেটোর রিপাবলিক, সরদার ফজলুল করিম; পৃ- ২৫৮; ত্রয়োদশ সংস্করণ; মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশনী
(১০) https://historycollection.co/population-control-was-no-joke-in-ancient-greece-and-the-roman-empire/11/
(১১) https://en.m.wikipedia.org/wiki/An_Essay_on_the_Principle_of_Population
(১২) Barlow, Nora 1958. The autobiography of Charles Darwin. p. 128
(১৩) Wallace, Alfred Russel 1908. My life: a record of events and opinions.
(১৪) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Eugenics
(১৫) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Infanticide
(১৬) https://m.theepochtimes.com/mass-baby-grave-discovered-under-ancient-roman-bathhouse_1154172.html
(১৭) https://en.m.wikipedia.org/wiki/History_of_eugenics#CITEREFLarson2004
(১৮) Galton, Hereditary Genius: 1
(১৯) https://archive.org/details/memoriesmylife00galtgoog
(২০) https://books.google.com.bd/books?id=xKjqCQAAQBAJ&lpg=PP1&pg=PA9&redir_esc=y#v=onepage&q&f=false
(২১) https://www.sfgate.com/opinion/article/Eugenics-and-the-Nazis-the-California-2549771.php
(২২) https://books.google.com.bd/books?id=G-crlAYsZ-MC&pg=PA123&redir_esc=y#v=onepage&q&f=false
(২৩) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Harry_H._Laughlin
(২৪) https://en.m.wikipedia.org/wiki/IBM_and_the_Holocaust
(২৫) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Francis_Galton
(২৬) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Bill_Gates_Sr.
(২৭) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Mary_Maxwell_Gates
(২৮) https://sites.google.com/site/billgates9004/ibm
(২৯) https://en.m.wikipedia.org/wiki/History_of_Microsoft
(৩০) https://en.m.wikipedia.org/wiki/Agenda_21
(৩১) https://youtu.be/0CDZiR3yGtI
(৩২) https://rationalwiki.org/wiki/Zeitgeist
(৩৩) https://youtu.be/pzIe3S0eFRc
https://www.thevenusproject.com/united-nations-award-given-jacque-fresco-city-designcommunity/?fbclid=IwAR2R1XC3g3oRldce7qTp3sV26Hog8Pq-VroMpsJjf6NoBPKjwTuzvfWwOXI
(৩৪) https://m.orlandoweekly.com/orlando/the-view-from-venus/Content?oid=2248863
(৩৫) http://www.prweb.com/releases/2012/4/prweb9403518.htm
(৩৬) https://youtu.be/2ApQSGezJBc
.











মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন