ওয়েলকাম টু দাজ্জাল'স ওয়ার্ল্ড- দ্য ওয়ার্ল্ড অফ ইলিউশন এন্ড ডিসেপশন

দাজ্জালিক মডার্ন সিভিলাইজেশন

প্রতিটি মানুষকে ফিজিকালি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু মানুসিক ভাবে সম্ভব। কোনো দর্শন, মতবাদ, থিওরি দিয়ে ব্রেইন ওয়াস করে দিলেই লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মানুষের পারসেপশন বা উপলব্ধি হল মূল বিষয়। এটাকে পরিবর্তন করে দিলে শাসক শ্রেণী (সরকার, বিগ ফার্ম, সিক্রেইট সোসাইটি - এদের গুরু দাজ্জাল) সহজে মানুষের প্রতিটি কাজ, চিন্তা, ইচ্ছা, কল্পনা, সম্পর্ক, বিবেক- বুদ্ধি-কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। পারবে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে। নিজ ইচ্ছে মত ম্যানিপুলেট করবে। ভালোলাগা ও মন্দ লাগা তারাই তৈরি করে দিবে। অর্থাৎ শাসক শ্রেণী যেমন চায় শোষিতরা তেমনি করবে, তেমনি ভাববে, তেমনি স্বপ্ন দেখবে।
এটা হল সাইকোলোজিকাল ওয়ারফেয়ার, মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। এর মাধ্যমে পুরো দুনিয়াকে কার্বন কোপি বানানো হয়েছে ও হচ্ছে। সকলের খাবারের অভ্যাস, পড়ার অভ্যাস, করার অভ্যাস, সব কিছু একই রকম। এই যুদ্ধের প্রধান অস্ত্র হল মিডিয়া। মিডিয়ার মাধ্যমে ইনফরমেশনকে ম্যানিপুলেট করা হয়। যার কাছে ইনফরমেশনের নিয়ন্ত্রণ থাকবে, মানুষের রুচি ও চাহিদা, ভবিষ্যৎ চিন্তা-ভাবনা সব কিছু সে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এভাবে কাজ করে মিডিয়া। মিডিয়া একটি বিষয় সকলের উপর চাপিয়ে দেয় এমনটা নয়, বরং তারা অনেক বিকল্প তৈরি করে। ধরুন একজন স্কুল বালক কোনো সাকসেসফুল মানুষকে অনুসরণ করবে। এখন তার কাছে অনেক বিকল্প আছে। সে হতে পারে ফিল্ম লাইনে শাহরুখ বা টম ক্রুসকে আইডল মানবে, বা ব্যবসায়িক লাইনে স্টিভ জবস, বিল গেটসকে। খেলায় টাইগার উডকে বা ক্রিকেটে শচিনকে। ফুটবলে মেসিকে অথবা নোবলে বিজয়ী কাউকে। অর্থাৎ স্কুল বালকের কাছে আইডল হিসেবে বেঁছে নেয়ার জন্য অনেক অপশন তৈরি আছে। এই সব কিছুই তৈরি করেছে মিডিয়া। বিকল্প গুলো ভিন্ন ভিন্ন কিন্তু এর গন্তব্য এক, এর উদ্দেশ্য এক।

উই আর লিভিং ইন এ ওয়ার্ল্ড অফ প্রিজনারস

সুতরাং ফিজিকালি সবাইকে কারাগারে বন্দী করা সম্ভব নয়, মানসিকভাবে সম্ভব। আজ পুরো দুনিয়াকে একটি কারাগারের রূপ দেয়া হচ্ছে। যেখানে আপনার প্রতিটি কাজ মনিটরিং করা হয়। প্রথমে শৈশব থেকে আপনার পারসেপশন বা উপলব্ধি তৈরি করা হয়, অতপর আপনি ও আমি তাদের স্লেভ হয়ে থাকতে প্রস্তুত হয়ে পড়ি। এরপর চলে মনিটরিং। মিডিয়া, ফেইসবুক, টুইটার, ইউটিউব আর ফিজিকাল দুনিয়ায় সিক্রেট সোসাইটি থেকে শুরু করে পুলিশ, নেভি সিল ইত্যাদি হল এগুলোর মনিটরিং ফিল্টার। আমি আর আপনি একটু এদিক ওদিক হলেই আমাদের পাকরাও করা হয়।
দুনিয়াকে একটি বৃহৎ কারাগারে রূপান্তর করা হয়েছে। কারাগার জুড়ে আছে শপিং মল আর মল। মার্কেট আর মার্কেট। আর আছে মার্কেটার’রা। এরা দুনিয়ার সব কিছু বিক্রি করতে পারে। শহরে খালি মল আর মল। বিগ শপিং মল। তার পাশে মিনি শপিং মল, তার পাশে আরো শপিং মল তার পাশে বড় বড় মার্ট আবার তার পাশে পার্কিং লট, তার পাশে ফুড কোর্ট, খালি বিক্রি। খালি বস্তুবাদের ছড়াছড়ি। হাসাপাতালও শপিং মল, স্কুলও মল, কোচিং সেন্টারও মল। সবাই নিজ নিজ আইডিয়া, প্রডাক্ট সার্ভিস বিক্রি করছে। মানুষ ছুটছে পাগলের মত। সারাদিনে কারাগারের ভিতরে নির্ধারিত কাজ শেষে বাসায় ফিরে এসেও তার ছুটি মেলে না। অবসরের সময়েও সে ছুটে নিয়ন্ত্রকের বানানো নিয়মে, নিয়ন্ত্রকের দেখানো জিনিস কিনতে। নিয়ন্ত্রকের বিনোদন মূলক অনুষ্ঠানে বিনোদিত হতে।
মানুষ কিভাবে সত্য জানবে, বড়জোর যখন কোনো বিষয়ে তার সন্দেহ হয় সে গুগুলিং করে। কোনো তথ্য লাগলে গুগুলে সার্চ করে জেনে নেয়। ভাবে এই তো তার কাছে স্বাধীন ভাবে কাজ করার মত সকল তথ্য সার্চ ইঞ্জিনে রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হল পুরো উল্টো। মানুষের মস্তিস্ককে আর্টিফিশিয়াল ইন্টালিজেন্স (AI) এর সাথে যুক্ত করা হয়েছে সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে। মানুষ কোথাও আটকে গেলে সার্চ করে উত্তর স্বরূপ নিয়ন্ত্রকের পূর্ব নির্ধারিত সেট করা তথ্য গুলো চলে আসে, তখন আমি আর আপনি ওটাকেই সত্য মনে করি। ধরুন, গুগুলে আফিয়া সিদ্দিকি লিখে সার্চ করলেন। তারা এমন সব তথ্য দিবে যার ফলে আপনি এই মহীয়সী নারীকে একজন সন্ত্রাসী মনে করবেন। কাশ্মির সীমান্তে একজন হিন্দু সেনা মারা গেল তাকে মেডিয়া বলছে শহীদ। হিন্দুত্ববাদে জীবন উৎসর্গ করা হিন্দুরাও মুসলিমদের শহীদ টার্ম উইস করছে। এই সব হল মেডিয়ার পারসেমশন তৈরি। সবাই নিয়মে বন্দী।
'মানুষ স্বাধীন ভাবে চিন্তা করুক' সভ্যতার নিয়ন্ত্রকরা এটা চায় না, তারা চায় একটি আনুগত হিউম্যান ফোর্স । যারা অন্ধ ভাবে তাদের কথা শুনবে, পালন করবে। তারা অবডিয়েন্ট ওয়ার্কার চায়। যারা তাদের কথা মত মেশিন চালাবে, বা পেপার ওয়ার্ক করবে। সবই ওয়ার্কার। মাসিক বেতন ৫০০০ হোক বা ৫০ লক্ষ, সাধারণ গার্মেন্টস শ্রমিক হোক বা মহাকাশ যানে কাজ করা কোনো বিজ্ঞানী তাকে অবশ্যই অবডিয়েন্ট ওয়ার্কার হতে হবে। ক্রিটিকাল থিকিং বাদ দিয়ে যুগের পর যুগে ধরে মরা পচা নীতির অনুসরণ করবে।
বর্তমানে আমরা যে কাগুজে মুদ্রা ব্যবহার করছি, এই মুদ্রাকে ব্যাংকের মাধ্যমে ডিজিটাল নাম্বারে কনভার্ট করে ফেলা হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে এক সময় আমরা কেউ কাগুজে টাকা স্পর্শ করতে পারব না। এমনকি রিকশা ভাড়াও দিব বিক্যাশ দিয়ে, ভিক্ষুককেও দান করব বিক্যাশ বা এম ক্যাশের মত ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে। আর এটাই হবে অর্থ ব্যবস্থার সবচে' ভয়াবহ রূপ।
আমরা সবাই প্রিজনার, প্রিজনারের রয়েছে প্রিজন কার্ড। এই কার্ডে আছে আমাদের অ্যায় ব্যয়ের সকল হিসাব যা নিয়ন্ত্রণ করছে দাজ্জালি প্রতিষ্ঠান। তারা প্রিজনার নাম্বার (Ex; NID Card number) দিয়ে সফটওয়ারে সার্চ দিবে, আর এক এক জন প্রিজনারের সকল হিসেব তারা দেখতে পারবে। কারণ আমরা সবাই প্রিজনার, সব কিছু মনিটরিং হচ্ছে আমাদের।
প্রিজনার দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে, আপনারা ভাবছেন পেশা বাছাই করার ক্ষেত্রে কয়েদিরা স্বাধীন? না এখানেও পরাধীন, ভবিষ্যতে কি হবে, লয়ার, ব্যাংকার, ডাক্টার ইঞ্জিনিয়ায় এটাও মিডিয়া পারসেপশনে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। হিজাব কী? ইসলাম কী? ডেমোক্রেসি কী? এই সব কিছু সংজ্ঞা তারা দিচ্ছে। বিয়ে কখন করবেন, কিভাবে করবেন, কাকে করবেন এটাও। কিভাবে অ্যায় করবেন কোন কোন খাতে ব্যয় করবেন এটাও।
এটা এমন একটি কারাগারা যেখানের কয়েদিরা নিজেদের স্বাধীন মনে করে। যেখানের বন্দীরা জানে না তারা বন্দী। বন্দীদের যারা মনিটরিং করছে তাদের অধিকাংশও বন্দী। যারা দাজ্জালি নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা থেকে বের হবার চেষ্টা করে তাদেরকে ফিজিকালি বন্দী বানানো হয়, অথবা দুনিয়া নামক কারগার থেকে বের করে দেয়া হয়। অধিকাংশ- মিডিয়ার রিপোর্টারও বন্দী, জাতির বুদ্ধিজীবীরাও বন্দী, মটিভেশনাল স্পিকাররাও বন্দী। বন্দীদের গার্ড দিচ্ছে বন্দীরাই, গাইড লাইন তৈরি করে দিচ্ছে বন্দীরাই। আসলে কে বন্দী আর কে মুক্ত তা কেউ বুঝে না। বাস্তবে দাজ্জালের অধিকাংশ কর্মকর্তা তার প্রভু দাজ্জালকে চিনে না।
একজন প্রিজনার ডাক্তার চাইলেও প্রিজনার রোগীকে স্বাধীনভাবে চিকিৎসা দিতে পারে না। ইচ্ছামাফিক মেডিসিন দিতে পারবে না। ডাক্টার তো নিজেই প্রিজনার তাকে বিগ ফার্মার বলে দেয়া মেডিসিন দিতে হবে। নির্দিষ্ট গাইড লাইনের বাহিরে যেতে পারবে না, একই কথা প্রযোজ্য শিক্ষক, উকিল, বিচারক, ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য।
দাজ্জাল আসার আগপর্যন্ত এভাবে চলতে থাকবে, এটা তাদের মিশন। দাজ্জাল মঞ্চে আসিন হবে, পুরো দুনিয়া শাসন করবে।
অনেকের নিকট আমার কথা বিস্ময়কর মনে হচ্ছে, হতে পারে ভাবছেন এটা কন্সপাইরেসি থিওরি টাইপের কিছু। তাদের বলব, চারপাশের জগতকে দেখুন, ভালো করে দেখুন, প্রতিটি জিনিস দেখুন ঘটনা দেখুন কি হচ্ছে অবজারভ করুণ। ইং শা আল্লাহ তখন একটি মহা পরিকল্পনা দেখতে পাবেন। একটি চলছে দুই হাজার বছর ধরে আরেকটি চলছে ১৫০০ বছর ধরে। সন্তানের ছেলে সন্তান একই মিশন চালিয়ে নিচ্ছে্‌। ক্রুসেডার ইংল্যান্ডের কিং উলিয়াম দ্য কনকুয়েরার এর বংশধররা বর্তমানের মডার্ন ক্রুসেডের কমান্ডিং করছে। আর এদেরকে ব্যবহার করছে কাব্বালাহ চর্চাকারী ইয়াহুদিরা।আল্লাহুম্মা আরিনাল আস'ইয়া আ'কামাহিয়া।
This is Dajjal's World
- A world of Deception
- A world of illusion
- A world of prisoners
---Kaisar Ahmed

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন