পিথাগোরিয়ান-কোপার্নিকান হেলিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমি প্রতিষ্ঠিত করেছে যারা, তাদের লাভ কি?

প্রশ্নঃ পিথাগোরিয়ান-কোপার্নিকান হেলিওসেন্ট্রিক এস্ট্রোনমি প্রতিষ্ঠিত করেছে যারা, তাদের লাভ কি?


ওদের অর্জন বা লাভটা সুদূরপ্রসারী।
সবার প্রথমে এটা দেখা প্রয়োজন যে, এই বিশ্বাসগত আদর্শের জন্মদাতারা কারা ছিলেন। কারা সে এস্ট্রোনোমিকাল আইডিয়াকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।।

ইতিহাস ঘাটলে এ তত্ত্বের উদ্ভাবকদের হিসেবে পিথাগোরাস,কোপার্নিকাস,নিউটন সহ আরো অনেক দার্শনিক/যাদুকরদের নাম মিলবে যারা প্রত্যেকেই ছিলেন কুফরি যাদুবিদ্যার দর্শনে বিশ্বাসী। এখনো সকলে স্বীকৃতি দেয় যে তারা যাদুবিদ্যার চর্চাকারীও ছিলেন। অর্থাৎ প্রত্যেকেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শয়তান-জ্বীনদের(এক্সট্রা ডাইমেনশনাল বিং) সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাছাড়া কিছু যাদুকররা যাদুকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে বলে যাদুর উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রকৃতির নীতিতে পরিবর্তন করে স্বার্থ হাসিল করা।
প্রশ্ন করব, শয়তান কি ন্যাচারাল অর্ডার বা ফিতরাত পছন্দ করে নাকি সেটাকে উল্টিয়ে দিতে চেষ্টা করে? এর উত্তর পাঠকদের উত্তম জানার কথা।

তাছাড়া, যেসকল শাস্ত্র স্ফেরিক্যাল পৃথিবী- মডার্ন এস্ট্রোনোমিকাল আইডিয়া প্রদান করে সেসব প্রাচীন কিতাবগুলোও সুস্পষ্ট বাম-পথের। হয় যাদুকরদের লেখা,নতুবা শয়তানের জ্বীনদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। যেমনঃ জোহার(কাব্বালা), ইন্ডিয়ান ফিলসফিক্যাল স্ক্রিপচার,হার্মেটিক শাস্ত্র প্রভৃতি।

এবার দেখা প্রয়োজন, কারা এসব মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করেছে! পলিটিকাল শক্তি ব্যবহার করে বাহ্যিকভাবে ক্যাথলিক খ্রিষ্টানরা(জেসুইট অর্ডার) একে প্রতিষ্ঠিত করে, কিন্তু এদের পেছনে শয়তানের সাথে সংযুক্ত এজেন্ডা হিসেবে পিথাগোরাসের আদর্শের ফ্রিম্যাসন, ইল্যুমিনাতির শেকলের জোড় ছিল। এর অজস্র সাক্ষ্যপ্রমাণ বিদ্যমান। অতএব, বুঝতে পারছেন কারা কাদের মতাদর্শকে দাড় করিয়েছে। এটা কন্সপাইরেসি থিওরি নয় বরং ফ্যাক্ট। প্রচলিত সাইন্টিফিক প্যারাডিমের ইতিহাস ঘাটুন, সব বুঝতে পারবেন। হয়ত বুঝতে পারবার কথা, ওদের উদ্দেশ্যও অশুভ।

*শয়তান ও তার অনুসারীরা সবসময় চায় মানুষ যেন সৃষ্টি ও স্রষ্টার ব্যপারে বিকৃত ধারনা রাখে।এজন্য এমন কোন মতাদর্শকে উদ্ভাবন এবং প্রমোট করতে চেষ্টা করবে যা একাধারে বিশ্বাসগত সমস্ত কিছুতে বিকৃতি নিয়ে আসবে এবং যৌক্তিকভাবে বিকৃতিকে জাস্টিফাই করবে। স্ফেরিক্যাল হেলিওসেন্ট্রিক পৃথিবী ও ইনফিনিট স্পেস তত্ত্ব সেরকমই এক দরজা। এটা আপনাকে শেখাবে, আপনি শূন্য থেকে এসেছেন স্রষ্টার ইন্টারভেনশন ছাড়াই বিগব্যাঙের মাধ্যমে। এর পরে বিবর্তনের মাধ্যমে মাছ-বানর-মানুষ হয়েছেন। আপনি অনন্ত মহাবিশ্বব্রক্ষ্মান্ডের কোন এক কোণে তারকাদের অংশ দ্বারা তৈরি গুরুত্বহীন-মূল্যহীন-উদ্দেশ্যহীন অতিক্ষুদ্র অস্তিত্ব। সৃষ্টিকর্তা নেই!! সবই কস্মিক এক্সিডেন্ট। হকিং-বিল ডকিন্সরা এটাই শেখায়।
*ওরা এগনস্টিসিজম চায়
*এথিজম চায়
*প্যান্থেইজম/মনিজম চায়

ওদের সাফল্যে আজকে অনেক প্র্যাক্টিসিং মুসলিমও মুখে ঈমানের কথা বলে,কিন্তু মাঝেমধ্যে মনের মধ্যে এগনস্টিসিজম তাড়িয়ে বেড়ায়। কাউকে বলতেও পারে না সংশয়ের কথা।অথচ মক্কার মুশরিকরাও তাওহীদে রুবুবিয়্যাতের স্বীকৃতি দিতো। ওরা আল্লাহর অস্তিত্বে কোন সংশয় প্রকাশ করত না। আল্লাহ্‌ বলেনঃ
وَلَئِن سَأَلْتَهُم مَّنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ خَلَقَهُنَّ الْعَزِيزُ الْعَلِيمُ

"আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন কে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে, এগুলো সৃষ্টি করেছেন পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহ"

ওদের সাফল্যে আজ অনেক মুসলিম পরিবারের ছেলেমেয়েরা অনেক কনফিডেন্সের সাথে মুরতাদ হয়ে যাচ্ছে, শুধু মাত্র সাইন্সের সাথে এডজাস্টমেন্ট না দেখে।

সেই সাথে মুরজিয়া আর দুর্বল ঈমানদাররা কাফেরদের ট্রোল(ইচ্ছেমত গাওয়া ভিত্তিহীন কথা) গুলোকে যুক্তির মাধ্যমে ইসলামি দলিল দিয়ে জাস্টিফাই করার মত নিকৃষ্ট ফিতনা সৃষ্টি করে দিয়েছে, ওদের আশা, হয়ত এ প্রচেষ্টা কিছু ব্যক্তিকে এগনস্টিক বানিয়ে হলেও সুস্পষ্টভাবে ইসলাম ত্যাগ থেকে ফেরাবে।

ওদের এজেন্ডার সাফল্যের কারনে এখন অল্প ইনভেস্ট করে ৯৯% অর্থলাভ সম্ভব হচ্ছে। সকল স্পেস এজেন্সির জন্য বিলিয়ন ডলারের বাজেট হচ্ছে যা আসছে সাধারন মানুষের পকেট থেকে, আর বিনিময়ে ওরা ফটোশপ-গ্রাফিক্সের দ্বারা ছবি ভিডিও বানিয়ে জনগনকে দেখাচ্ছে।

ওদের সাফল্যে আজ মানুষ এলিয়েন বা ভীনগ্রহের প্রানীর কল্পনা করে, যারা কিনা আক্রমনও করতে পারে দুনিয়ায় 😆। একটি 'কন্সপাইরেসি থিওরি' প্রচলিত আছে, প্রজেক্ট ব্লুবিম এর দ্বারা এলিয়েন নাটক করে ওয়ানওয়ার্ল্ড গভার্মেন্টের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে যার নেতৃত্ব দেবে মিথ্যামসীহ!

এভাবে বিভিন্ন দিক দিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আপনার চিন্তা-ধর্মীয় বিশ্বাসে ওরা সাফল্যের সাথে প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে। ধর্মীয় চিন্তাগুলো আসে আসমানি শক্তিকে ঘিরে। এজন্য শয়তান এটা ভাল করেই জানে, মানুষের বিলিফ প্যাটার্ন চেঞ্জ করতে হলে প্রথমেই আসমানের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হবে। সেটাকে রিডিজাইন করে ঢেলে সাজাতে হবে। এর পরে একাএকাই বাকি সকল চিন্তাগুলো প্রত্যাশিত খাপে বসে যাবে। করেছেও তাই, লক্ষণীয় মাত্রায় সাফল্যও পেয়েছে।

এভাবে ভাবলে, আপনি নিজেই এস্ট্রোনোমিকাল ডিস্টর্শনের অনেক কারন মাইনর কারন পাবেন। তবে উল্লিখিত বিষয়টাকে আমার কাছে প্রধান কারন বা লাভ হিসেবে মনে হয়।
এরপরেও,একদল জিজ্ঞাসা করবে- শয়তানের নিকটতম ও নিকৃষ্টতম কাফেররা কেন ভ্রান্ত এস্ট্রোনমিকে প্রতিষ্ঠা করেছে বা এতে তাদের লাভ কি?

তাদের নিকট জানতে চাইবো, দাজ্জালের আবির্ভাবের পরে মানুষের কাছে গিয়ে নিজেকে রব দাবি করায় ওর লাভ কি?!!!
_______________________________[সংক্ষেপিত]

মন্তব্যসমূহ