"দাজ্জালের জন্ম হয়েছে অনেক আগেই। রাসুলুল্লাহ সা.-এর সময়েই সে ছিল বর্তমান। দাজ্জাল এই পৃথিবীতেই রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে তার আত্মপ্রকাশ ঘটবে। এর আগে সে ঘুমিয়ে থাকবে বা হাত-পা গুটিয়ে নিভৃতে বসে থাকবে, এমন কোনো প্রমাণ নেই। চূড়ান্ত আত্মপ্রকাশের আগে নেপথ্যে থেকে খলনায়কের ভূমিকা পালন করা খুবই স্বাভাবিক বিষয়।
ফিরআউনও নিজেকে রব দাবি করেছিল। দাজ্জালও নিজেকে রব দাবি করবে। পার্থক্য হলো, ফিরআউন নিজে সেহের (জাদু) জানত না। মুসা আ.-এর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সে বিভিন্ন শহর থেকে জাদুকর আনিয়েছিল। পক্ষান্তরে দাজ্জাল নিজেই হবে জাদুকর। এ ছাড়াও ফিরআউন দাজ্জালের মতো অলৌকিক ক্ষমতার আধার ছিল না। আর প্রকাশ থাকে যে, দাজ্জালের জাদু হবে ভয়াবহ, ক্ষমতা হবে অনন্য। সাধারণ রাকিরা কিছুতেই রুকইয়াহ করে তা প্রতিরোধ করতে না পারারই কথা। দাজ্জাল সরাসরি নিজে কারও ওপর সেহের করলে তাকে বাঁচানো আদতে দুরূহই মনে হয়।
ইসলামগ্রহণের পূর্বে দাজ্জালের সঙ্গে সাহাবি তামিম দারি রা.-এর সাক্ষাৎ হয়েছিল। এ থেকে অনুমেয় যে, দাজ্জালের সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্ভব। হ্যাঁ, সে কার সঙ্গে দেখা দেবে, সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত বিষয়। তামিম দারি রা. ও তার সঙ্গীরা দাজ্জালের পূজারী ও অনুসারী ছিলেন না। এতদসত্ত্বেও তাদের সঙ্গেই যখন দাজ্জাল সাক্ষাৎ করেছে, আর যেই দুর্যোগে পড়ে তাদের নৌকা সেই দ্বীপে গিয়ে উঠেছিল, সেই দুর্যোগও যে দাজ্জাল কর্তৃক সৃষ্ট ছিল না, তা-ও নিশ্চিত করে বলার সুযোগ নেই। তো অন্যদের সঙ্গেই যদি সে সাক্ষাৎ করতে পারে তাহলে তার অনুসারী ও অনুচর যারা, যারা দুনিয়াতে দাজ্জালি মিশন বাস্তবায়ন করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, তাদের সঙ্গে দাজ্জালের নিয়মিত বা অনিয়মিত সাক্ষাৎ বা অন্তত যোগাযোগ মোটেও অসম্ভব কিছু নয়।
নির্দিষ্ট সময়ে তার আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তার আত্মপ্রকাশ ঘটবে প্রচণ্ড রাগ থেকে। এ থেকেও অনুমান করা যায়, কুফরের ধ্বজাধারী এই ইহুদি দাজ্জাল আগে থেকেই পৃথিবীর খবরাখবর সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট থাকবে। সে গায়েব জানে না। কোনো মাধ্যম ব্যবহার করেই তাকে আপডেট থাকতে হবে। এবং এর মাধ্যমেই সে তার আত্মপ্রকাশের ক্ষণ জানতে পারবে। অবশেষে ইমান ও কুফরের সংঘাতে মুমিনদের প্রতি চরম ক্রোধ থেকে সে আর আপন অবস্থায় স্থির থাকতে পারবে না; বরং গোপন ষড়যন্ত্রের ইতি টেনে এই পৃথিবীতে সরাসরি আত্মপ্রকাশ করবে।
দাজ্জাল প্রকাশ্যভাবে কাজ করবে নির্ধারিত সময়ে। কিন্তু সে তার অনুসারী মানুষ ও জিনদের দ্বারা, সেহের ও শয়তানি শক্তির দ্বারা পূর্ব থেকেই হয়তো মুমিন সৈনিকদের বিরুদ্ধে তার অদৃশ্য লড়াই চালিয়ে যাবে। আমার ধারণা, আল্লাহর দলের সৈনিকরা লড়াইয়ের ময়দানে হয়তো এর কিছু কিছু বিষয় প্রত্যক্ষভাবে আঁচ করতে পারেন। আর অনুমিত হয় যে, শয়তানের পূজারীরা দাজ্জাল কর্তৃক বিভিন্ন মদদ লাভ করে থাকে।”
-আলী হাসান ওসামা

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন